‘বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস’ উপলক্ষে রামগড়ে সমাবেশ

রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩


‘বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে
খাগড়াছড়ির রামগড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।



আজ ২৮ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার সকাল সাড়ে
১০টায় ‘সবুজ পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে অগ্রণী যুব সমাজ’  এর ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশের
আগে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।



“পাথর উত্তোলন ও পাহাড় কেটে বিপদ ডেকে
আনবেন না, ব্যক্তি মুনাফার লোভে পরিবেশ ধ্বংসকারীদের প্রতিরোধ করুন” শ্লোগানে আয়োজিত
সমাবেশে এলাকার যুবক জার্মেন্ট ত্রিপুরার সভাপতিত্বে ও রামগড় ডিগ্রী কলেজের ছাত্র তৈমাং
ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কলেজ ছাত্র নয়ন জ্যোতি চাকমা, এলাকার সাবেক মেম্বার
বুলু মারমা ও সাবেক মেম্বার অমৃত লাল ত্রিপুরা।


বক্তারা বলেন, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান
তিন জেলা নিয়ে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম। সমতল থেকে কয়েক লক্ষ সেটলার অনুপ্রবেশ, ব্যাপকহারে
বনজঙ্গল উজাড় হওয়ার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃতি-পরিবেশ আজ মারাত্মক হুমকির
সম্মুখীন। এর নেতিবাচক প্রভাব পাহাড়িদের অতিষ্ঠ করে তুলছে।



তারা বলেন, একটা দেশের পরিবেশ রক্ষা করতে
হলে কমপক্ষে ২৫% বনভূমি থাকা দরকার। কিন্তু সারাদেশে ১৫% এর কম বনভূমি রয়েছে। ফলে সারাদেশের
ন্যায় পার্বত্য চট্টগ্রামেও অনাবৃষ্টি ও উষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি
শুরু হলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত দেখা যাচ্ছে না। একটা সময় পাহাড়ে গর্জন, চাপালি ও কড়ই
গাছসহ অসংখ্য পরিবেশবান্ধব দেশি প্রজাতির গাছ দেখা যেত। কিন্তু কাঠ পাচারকারীদের অবাধ
লুন্ঠনে সেসব পরিবেশবান্ধব গাছগুলো নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে প্রাকৃতিক সম্পদ
নষ্ট হচ্ছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব দেখা যাচ্ছে।


বক্তারা ২০১৭ সালে পার্বত্য জেলাগুলোতে
পাহাড় ধসে শত শত লোকের প্রাণহানির ঘটনা তুলে ধরে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেটলার
বাঙালিদের পুনর্বাসনের কারণে আগের চেয়ে অধিক হারে জনবসতি হওয়ায় বসবাসের ক্ষেত্রে পরিবেশের
ভারসাম্য মেনে চলা হচ্ছে না। উপরন্তু পাহাড়ে ভূমি সুরক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন
পদক্ষেপ নেই। তারা আরো বলেন, প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করার ফলে ছোট ছোট খাল,
ঝিরিতে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট দেখা দেওয়ায়
জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। শুধু তাই নয় পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর রাবার, সেগুন, ইউক্লিপটাসসহ
অসংখ্য বিদেশি প্রজাতির গাছ লাগানোর কারণে মাটিতে ফাটল দেখা দিচ্ছে এবং যেকোনো সময়
পাহাড় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া ব্যাপকহারে তামাক ক্ষেত করার কারণে ধানচাষের জমি
সঙ্কুচিত হচ্ছে এবং আবহাওয়া দূষিত হচ্ছে। বর্তমানে অবাধে পাহাড় কেটে সীমান্ত সড়ক নির্মাণের
ফলে ব্যাপকভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।



বক্তারা প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর রাবার, সেগুন, ইউক্লিপটাসসহ বিদেশি প্রজাতির গাছ লাগানো বন্ধ
করা ও ছোট খাল ঝিরি ধ্বংসের মূল হোতা অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীদের প্রতিরোধে জনগণকে এগিয়ে
আসার আহ্বান জানান।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url