‘স্বাধীন পার্বত্য রাজ্য’কে জেলায় রূপান্তর বিষয়ে কুদুকছড়িতে আলোচনা সভা

রাঙামাটি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
মঙ্গলবার, ১ আগস্ট ২০২৩


ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় ১৮৬০ সালের ১ আগস্ট “স্বাধীন পার্বত্য
রাজ্য’কে ‘জেলায় রূপান্তর’ এর ১৬৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটির সদর উপজেলার কুদুকছড়িতে
আলোচনা সভা করেছে ইউপিডিএফ’র রাঙামাটি সদর উপজেলা ইউনিট।



আজ ১ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, দুপুর ১২টার সময় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ইউপিডিএফ’র
রাঙামাটি সদর উপজেলা ইউনিটের সমন্বয়ক সচল চাকমার সভাপতিত্বে ও নির্ণয় চাকমার সঞ্চালনায়
আলোচনা করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ধর্মশিং চাকমা, হিল উইমেন্স
ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা সভাপতি রিমি চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি সদর উপজেলা
সভাপতি আনন্দ চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক নিশি
চাকমা।



আলোচনা সভায় সচল চাকমা বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে
স্বাধীন পার্বত্য রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে এ অঞ্চলকে জেলায় রূপান্তর করে তাদের শাসন-শোষণ
কায়েম করেছিল। শুধু তাই, নয় এ অঞ্চলে শাসন কায়েম হওয়ার পর ব্রিটিশরা নানা আইন-কানুন,
বিধি-বিধান প্রণয়ন করে সভা, সমাবেশসহ সংগঠন করার গণতান্ত্রিক অধিকারও খর্ব করেছিলো।
তবে সে সময় চাকমা রাণী কালিন্দী ব্রিটিশদের এমন অপশাসন মেনে নেননি। ফলে তার জীবদ্দশায়
ব্রিটিশরা পুরো পার্বত্য অঞ্চলে শাসন-শোষন কায়েম করতে পারেনি।



তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় শাসন-শোষণ করার পর ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ
থেকে চলে যাবার প্রাক্কালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি দেশ বিভক্ত করে দেয়ার সময় সম্পূর্ণ
অমুসলিম অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রামকে উগ্র ধর্মান্ধ মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের সাথে
যুক্ত করে দিয়ে এ অঞ্চলের অধিবাসীদের্ আরেক অন্ধকার ঠেলে ফেলে দেয়। যার খেসারাত আজো
পাহাড়িদের দিতে হচ্ছে। পাহাড়িদের উপর এখনো অন্যায় দমন-পীড়ন জারি রাখা হয়েছে।



ধর্মশিং চাকমা বলেন, ব্রিটিশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সেনাপতি রুনু খার আহ্বানে
তৎসময়ে যেভাবে যুব সমাজ প্রতিরোধ যুদ্ধ করেছে তা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়। তিনি বলেন,
চাকমা রাণী কালিন্দী যেমন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন মেনে নেননি, তার পূর্বসূরি সেনাপতি
রুনু খা, যুবরাজ জান বক্স খা, রাজা শের দৌলত খাও ব্রিটিশদের অন্যায় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।


রিমি চাকমা বলেন, নারী আন্দোলনের অনূপ্রেরনাদায়ি চাকমা রাণী কালিন্দী
একজন। সেই সময়ে ধুরন্ধর ব্রিটিশ শাসক ক্যাপ্টেন লুইনের মতো ব্যক্তির কাছে তিনি মাথা
নত না করে যে সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছেন তা সবাইকে অনুপ্রেরণা যোগায়।



আনন্দ চাকমা বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা তাদের নিজেদের ইচ্ছেমত আইন-কানুন
প্রণয়ন করে এ অঞ্চলে অধিবাসীদের উপর তা চাপিয়ে দিয়েছিল।



সভায় বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের সঠিক ইতিহাস জানার মাধ্যমে এবং ঐতিহাসিক
ঘটনাবলী থেকে শিক্ষা নিয়ে পার্বত্য চট্টগামের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করার
উপর গুরুত্বারোপ করেন।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url