খাগড়াছড়ির স্বনির্ভরে সাত খুনের বিচারের দাবিতে মানিকছড়িতে পিসিপি’র বিক্ষোভ

মানিকছড়ি প্রতিনিধি,
সিএইচটি নিউজ

রবিবার, ১৩ আগস্ট
২০২৩


২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট খাগড়াছড়ির স্বনির্ভরে রাষ্ট্রীয়
বাহিনীর মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে পাহাড়ি ছাত্র
পরিষদের নেতা শহীদ তপন-এল্টন ও যুব নেতা পলাশ চাকমাসহ সাত জনকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার
বিচার দাবিতে মানিকছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) মানিকছড়ি উপজেলা শাখা।


উক্ত হত্যাকাণ্ডের ৫ম বার্ষিকীকে সামনে রেখে আজ রবিবার
(১৩ আগস্ট ২০২৩) সকাল ১১টায় মানিকছড়ি উপজেলা সদরের মানিকছড়ি কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের
সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মানিকছড়ি সরকারি কলেজ গেট হয়ে ধর্মঘরে
গিয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।


সমাবেশে পিসিপির মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক
অংসালা মারমা সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক
অনিমেষ চাকমা ও মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি অংক্য মারমা।


 

ছাত্র নেতা অনিমেষ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের
রাষ্ট্রীয় বাহিনী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে জাতি ধ্বংসের নীলনক্সা বাস্তবায়ন
করছে। নব্য মুখোশ সন্ত্রাসীসহ নামে বেনামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তৈরি করে পাহাড়িদের
অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের আন্দোলনকামী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, সাধারণ জনগণকে হত্যা-গুম-খুন-অপহরণের
মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা সংঘটিত করছে। তারই অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর ত
কালীন খাগড়াছড়ি ব্রিগেডের কমাণ্ডার ব্রিগ্রেডিয়ার
জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ তার সৃষ্ট নব্য মুখোশ সন্ত্রাসীদের দিয়ে ২০১৮
সালের ১৮ আগস্ট খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজারে ন্যাক্কারজনক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ছাত্রনেতা
তপন-এল্টন ও যুবনেতা পলাশ চাকমাসহ ৭ জনকে হত্যা করেছে।




সমাবেশে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের দমন-পীড়ন, হত্যা,
গুম করে পাহাড়ি জনগণের আন্দোলন সংগ্রামকে দমিয়ে রাখা যাবে না। শহীদ তপন-এল্টন-পলাশ
চাকমাসহ আরো শত শত সহযোদ্ধা অধিকারের জন্য জীবন উ
সর্গ করেছেন। সে সকল শহীদ সহযোদ্ধাদের রক্ত
কোন দিনই বৃথা যেতে পারে না। তাদের সংগ্রামের চেতনায় উজ্জ্বীবিত হয়ে আমরা পার্বত্য
চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। তিনি আন্দোলন জোরদার করতে ছাত্র
সমাজকে সংগঠিত হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


সমাবেশে অংক্য মারমা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫২ বছর
হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহকে নিজেদের আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে
থাকার জন্য, জাতির অধিকারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। আর এ লড়াইকে দমন করতে সরকার শাসকগোষ্ঠী
পাহাড়িদের ওপর অন্যায় অত্যাচার অব্যাহত রেখেছে।




তিনি আরো বলেন, স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সেনাবাহিনীর
প্রত্যক্ষ মদদে সংঘটিত হয়েছে। পাহাড়ি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে
ধ্বংস করে দেয়ার জন্য জনগণের মনে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করতে এ নির্মম হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।
কিন্তু মুক্তিকামী জনতার আন্দোলন দমানো যায়নি এবং ভবিষ্যতেও দমানো যাবে না।




সমাবেশ থেকে বক্তারা, স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সুষ্ঠু
তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িত খাগড়াছড়ি ব্রিগেডের সাবেক কমাণ্ডার আব্দুল মোতালেব
সাজ্জাদ মাহমুদসহ সকল সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপূর্বক বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, খুনি-সন্ত্রাসীদের
সেনা মদদদান ও তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক
পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
 



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url