কাপ্তাইয়ে স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও রামগড়ে গৃহবধুকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় দুই নারী সংগঠনের নিন্দা ও প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিনিধি,
সিএইচটি নিউজ

মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর
২০২৩


রাঙামাটির কাপ্তাই
উপজেলার রাইখালীর মিতিঙ্গাছড়িতে স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের ৬ সেনা সদস্য কর্তৃক এসএসসি
পরীক্ষার্থী এক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও খাগড়াছড়ির রামগড়ে সেটলার বাঙালি কর্তৃক
পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে
নারী সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী
সংঘ।




আজ মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩) হিল উইমেন্স ফেডারেশনের
সভাপতি নীতি চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কণিকা দেওয়ান সংবাদ মাধ্যমে
প্রদত্ত বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।




বিবৃতিতে নেত্রীদ্বয় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পার্বত্য
চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনী এখন পাহাড়ি জনগণের নিরাপত্তার চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাদের দ্বারা পাহাড়ি নারী, শিশু-কিশোরীরা প্রায়ই ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
গত ৩ সেপ্টেম্বর সকালে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের মিতিঙ্গাছড়ি গ্রামে
স্থানীয় মিতিঙ্গাছড়ি সেনা ক্যাম্পের সাদা পোশাক পরিহিত ৬ সেনা সদস্য কর্তৃক এসএসসি
পরীক্ষার্থী এক স্কুল ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
উক্ত ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় কার্বারিকে ক্যাম্পে ডেকে
ঘটনা প্রকাশ না করার জন্য হুমকি প্রদান করা হয়েছে।




অপরদিকে, একই দিন রাতে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার পাতাছড়া
ইউনিয়নের পাগলা পাড়া এলাকায় মো. রহমত উল্ল্যাহ (৪৫) কর্তৃক তার বাগানে কাজ করা এক পাহাড়ি
গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রামগড় থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযুক্ত
ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে।




নেত্রীদ্বয় অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি
দিবাগত মধ্যরাতে বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের অরাছড়িতে দুই মারমা বোনকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের
ঘটনায় জড়িত সেনা সদস্যদের বিচার না হওয়ার কারণে মিতিঙ্গাছড়ির গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।




পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়ার অসন্তোষ
প্রকাশ করে বিবৃতিতে নেত্রীদ্বয় বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্টীয় বাহিনী ও সেটলার
বাঙালি কর্তৃক এ যাবত সংঘটিত ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অভিযুক্তদের
দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয়নি। ধর্ষকরা আইনের ফাঁক গলিয়ে আদালত থেকে জামিন নিয়ে পূনরায় একই
ঘটনা সংঘটিত করে থাকে। এমন উদাহরণ হিসেবে রাঙামাটির লংগদুতে নিজ ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুর রহিমের মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন
লাভ ও কারাগার থেকে মুক্তির পর পূনরায় বিদ্যালয়ে যোগদানের ঘটনাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আর যেসব ঘটনায় রাষ্ট্রীয় বাহিনী জড়িত থাকে সেসব ঘটনায় বিচার তো দূরের কথা ঘটনা ধামাচাপা
দিতে বলপূর্বক যা যা করা দরকার তা করা হয়ে থাকে।




বিবৃতিতে নেত্রীদ্বয় অবিলম্বে কাপ্তাইয়ে স্কুলছাত্রীকে
গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সেনা সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও চাকরি
থেকে বরখাস্ত করা, রামগড়ে গৃহবধুকে ধর্ষণ চেষ্টায় জড়িত মোহাম্মদ রহমতকে গ্রেফতার এবং
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারী ধর্ষণ, নির্যাতন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি
জানান।



হিল উইমেন্স ফেডারেশনের
কেন্দ্রীয় সদস্য এন্টি চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিবৃতির বিস্তারিত জানানো
হয়েছে।





সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url