রাঙামাটি কাপ্তাইয়ে সেনা সদস্যদের কর্তৃক স্কুল ছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নিন্দা ও প্রতিবাদ

ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩


রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার মিতিঙ্গাছড়িতে স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের ৬ সেনা
সদস্য কর্তৃক এসএসসি পরীক্ষার্থী এক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা
ও প্রতিবাদ জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।



আজ রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩) সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যৌথ বিবৃতিতে
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এই প্রতিবাদ জানান।



বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধেমে জানতে পেরেছি যে,
গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে সেনাবাহিনীর ৬ জন সদস্য কর্তৃক পাহাড়ি এক
স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সেনাবাহিনী কর্তৃক গণধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা করে
রাখতে সেনা সদস্যরা মিটিঙ্গাছড়ার পাড়ার প্রধান, ভিক্টিম পরিবার ও কয়েকজন মুরব্বীকে
ক্যাম্পে ডেকে হুমকি প্রদান এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে ভিক্টিমকে ডেকে নিয়ে
সেনাদের শেখানো কথা মতো জোরপূর্বক সাক্ষা
কার নিয়ে ফেসবুকে
ভিডিও প্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা সম্পূর্ণ প্রচলিত আইন বহিঃর্ভূত।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট কাপ্তাইয়ের সেনা সদস্যদের কর্তৃক পাহাড়ি এক স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণের
ঘটনাকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছে।



নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ করে বলে, সারাদেশে নারী ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নের ঘটনা বেড়ে
চলেছে। এসব ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হচ্ছে না । পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষেত্রে এ
ঘটনা আরো ভয়াবহ। সে অঞ্চলের ধর্ষণের ঘটনায় মেডিক্যাল রিপোর্টের ওপর গোপন নিষেধাজ্ঞা
জারি করে রাখা হয়েছে, ধর্ষণের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে ভিক্টিম ও তার পরিবারকে হুমকি,
হয়রানি করা হয়, জড়িতদের গ্রেফতার করা হলেও শাস্তি নিশ্চিত না করে আইনের ফাঁকে জামিনে
বের করে দেয়া হয়। ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলেও তা শুধু কাগজে কলমে। বাস্তবে
আইনের কোনো প্রয়োগ নেই। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক এসবই ঘটনা ঘটলে তা বিচারের
আওতায় আনা দূরে থাক, বলপ্রয়োগ করে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। ২০১৭ রাঙামাটির বিলাইছড়িতে
দুই মারমা তরুণীকে সেনাবাহিনী সদস্য কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনায় আমরা লক্ষ্য করেছি সেনাবাহিনী
উক্ত ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা রাসেল মারমাকে দিয়ে
ভিক্টিমকে উপস্থিতি রেখে সংবাদ সম্মেলন করিয়েছিল, সেনা সদস্যরা ভিক্টিমের সাথে থাকা
চাকমা রাণী য়েন য়েন কে হামলা করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল থেকে ভিক্টিমকে তুলে নিয়েছিল।
কিন্তু ঘটনার প্রতিবাদে সে সময় পাহাড় সমতলে তীব্র আন্দোলনের ফলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে
সক্ষম হয়নি।



তারা বলেন, পাহাড়ে দশকের পর দশক সেনাশাসন জারি রাখার ফলে নিরাপত্তা বাহিনী
কর্তৃক পাহাড়ে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, ভূমি বেদখল ও নারী নিপীড়নের
ঘটনা অহরহ ঘটছে। নিরাপত্তা বাহিনীর পাহাড়ি জনগণকে ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে দেশের আইন
ও বিচার প্রক্রিয়াকে স্থবির করে রাখা হয়েছে। ফলে অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা সহজে
পার-পেয়ে যায় এবং যাচ্ছে।



নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাশাসন তুলে নিয়ে পাহাড়ে
মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ এবং সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান।



বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগিব নাঈম, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল  ইসলাম সোহেল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি
সালমান সিদ্দিকী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান,বাংলাদেশ ছাত্র
ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাওফিকা
প্রিয়া, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।





Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url