কাপ্তাইয়ে সেনা সদস্য কর্তৃক পাহাড়ি ছাত্রীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে মহালছড়িতে পিসিপি’র বিক্ষোভ

মহালছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩


রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ৬ সেনা সদস্য কর্তৃক
এক পাহাড়ি স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও রামগড়ে বাঙালি কর্তৃক পাহাড়ি নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার
প্রতিবাদে এবং ঘটনার সাথে জড়িততের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে মহালছড়িতে
বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।



আজ শনিবার (০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩) শনিবার দুপুর
১২টার সময় মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
হয়।



সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মহালছড়ি
উপজেলা শাখার সদস্য চিংসাপ্রু মার্মার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের
খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি শান্ত চাকমা ও ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)
সংগঠক স্থির চাকমা।


বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত
সেনাবাহিনী পাহাড়িদের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার লক্ষ্যে জাতিগত নিপীড়নের অংশ হিসেবে
ধর্ষণ, নির্যাতন, অন্যায়-অবিচার জারি রেখেছে। তারই অংশ হিসেবে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাঙামাটির
কাপ্তাইয়ের রাইখালীর মিতিঙাছড়িতে এক পাহাড়ি স্কুলছাত্রীকে ৬ সেনা সদস্য কর্তৃক গণধর্ষণ
ও একই দিন খাগড়াছড়ির রামগড়ে রহমত উল্ল্যাহ নামের সেটলার বাঙালি কর্তৃক এক পাহাড়ি নারীকে
ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। একই দিন সংঘটিত উক্ত দুই ঘটনায় পুলিশ রামগড়ের ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে
গ্রেফতার করলেও কাপ্তাইয়ে অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে এখনো কোন আইনি পদক্ষেপ নেয়া
হয়নি।



বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে আরো বলেন, সেনাবাহিনীর
একটি গোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত
হচ্ছে। সেনাবাহিনীর নিয়ম-শৃঙ্খলা ও তাদের সর্বোচ্চ সম্মানকে ভুলুন্ঠিত করে এ গোষ্ঠিটি
প্রতিনিয়ত হীন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তাদের দ্বারা ১৯৯৬ সালে পাহাড়ি নারী নেত্রী কল্পনা
চাকমাকে অপহরণ, ২০১৬ সালে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ভিতর সোহাগী জাহান তনুকে ধর্ষণের
পর হত্যা, ২০১৮ সালে বিলাইছড়িতে দুই মারমা বোনকে ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে।
কিন্তু এসব ঘটনার কোন বিচার ও জড়িতদের শাস্তি না হওয়ায় আবারো কাপ্তাইয়ে গণধর্ষণের মতো
ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।


তারা বলেন, শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনীর এই
কায়েমী স্বার্থবাদী অংশটি পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল, বিচার বহির্ভুত হত্যা, গুম, নব্যমুখোশদের
মতো সন্ত্রাসী গ্রুপ লালন-পালন করে পাহাড়ে অরাজকতা সৃষ্টি করছে।



বক্তারা বলেন, কাপ্তাইয়ের গণধর্ষণের ঘটনা
ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনা অস্বীকার করতে বাধ্য
করেছে এবং তার ভিডিও আইন বহির্ভুতভাবে সামাজিক মাধমে প্রকাশ করেছে। এমনকি মিতিঙ্গাছড়ি
এলাকার জনগণকে কড়াকড়িভাবে নজরদারির মধ্যে রেখেছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।



বক্তারা অবিলম্বে রাঙামাটি কাপ্তাইয়ে গণধর্ষণের
ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িদ সেনা সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং রামগড়ে ধর্ষণ
চেষ্টাকারী রহমত উল্ল্যাহকে উপযুক্ত সাজা প্রদানের জোর দাবি জানান।



 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url