পার্বত্য চট্টগ্রামে পাকিস্তানি আগ্রাসনের ৭৬ বছর উপলক্ষে চবিতে পিসিপি'র আলোচনা সভা

দেশভাগের শিক্ষা হল রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত না হলে পরাধীনতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না- আলোচনায় বক্তারা


চবি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
সোমবার, ২১ আগস্ট ২০২৩



পাকিস্তানের বেলুচ রেজিমেন্ট কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে আগ্রাসনের ৭৬
বছর উপলক্ষে গতকাল ২০ আগস্ট ২০২৩, রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৃহত্তর
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ-এর চট্টগ্রাম মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার
উদ্যোগে সংক্ষিপ্ত পরিসরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।



উক্ত আলোচনা সভায় মূল আলোচক ছিলেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
শাখার সাধারন সম্পাদক রোনাল চাকমা এবং সম্পূরক আলোচক ছিলেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয়
সাধারন সম্পাদক অমল ত্রিপুরা। আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন
কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক রিতা চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার
সাধারন সম্পাদক অমিত চাকমা প্রমুখ।


রোনাল চাকমা বলেন, ১৯৪১ সালের ভারতের আদমশুমারী অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের
পাহাড়ি জনসংখ্যার পরিমাণ ছিল শতকার ৯৮ ভাগ এবং অন্যান্য জনসংখ্যা ছিল শতকরা ০২ ভাগ।
দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশবিভাগ বলা হলেও এর রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে
বেশি। পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে মুসলিম লীগ এবং কংগ্রেসের বাকবিতন্ডা হলেও অমীমাংসিত
অমুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই অঞ্চলকে লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সিদ্ধান্তে পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত
করা হয়। ঐতিহাসিক এই দিনে পাকিস্তানের বেলুচ রেজিমেন্ট পার্বত্য চট্টগ্রামে জোরপূর্বক
সশস্ত্র আগ্রাসন চালায়। পার্বত্যবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি।



তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশ বেনিয়া শাসকদের কূটকৌশলের কারণে আজ ভারতীয় উপমহাদেশের
বহু জাতি-জনগণ পরাধীন। দেশ স্বাধীন হলেও জাতিগত সংখ্যালঘুরা প্রতিনিয়ত নিপীড়ন- নির্যাতনের
শিকার হচ্ছে। দেশবিভাগের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে আজ রাজনৈতিকভাবে
সংগঠিত হয়ে শক্তিশালী হতে হবে।



অমল ত্রিপুরা বলেন, দেশবিভাগের সময় ঐতিহাসিক মূহুর্তে পাহাড়ি জনগণ রাজনৈতিকভাবে
সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ না থাকায় ধুরন্ধর ব্রিটিশদের পরিকল্পনায় অমুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ
পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান রাষ্ট্রে জোরপূর্বকভাবে অন্তর্ভুক্ত
করা হয়। দেশভাগের সময় পার্বত্য এলাকায় নেতৃত্ব দেয়া স্নেহ কুমার চাকমা তাঁর ঐতিহাসিক
ভূমিকার কারণে সম্মান এবং শ্রদ্ধার যোগ্য। ঐতিহাসিক এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ছাত্র
সমাজকে পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত ভূমি বেদখল, খুন-গুমসহ অন্যায় নিপীড়ন নির্যাতনের
বিরুদ্ধে রুঁখে দাঁড়াতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজকে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের
বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে ভূমিকা রাখতে হবে।



আলোচনার শেষ পর্যায়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছাত্রদের
মধ্যে অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। পিসিপির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক
অমল ত্রিপুরা সরাসরি প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্যে দিয়ে আলোচনা সভাটি
সমাপ্ত হয়।



 




সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url