লংগদুতে ধর্ষক আব্দুর রহিমকে স্কুল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও যাবজ্জীবন সাজা বহালের দাবিতে মানববন্ধন
লংগদু
(রাঙামাটি), সিএইচটি নিউজ
বৃহস্পতিবার,
২৪ আগস্ট ২০২৩
রাঙামাটির
লংগদুতে নিজ বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান
শিক্ষক আব্দুর রহিমকে করল্যাছড়ি রশিদ সরকার (আর এস) উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে
বহিষ্কার ও যাবজ্জীবন সাজা বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও
এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ।
আজ
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট ২০২৩) লংগদু উপজেলা সদরের শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে এই মানববন্ধন
অনুষ্ঠিত হয়।
দেড়ঘন্টা
ব্যাপী চলা এ মানববন্ধনে করল্যাছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে
বক্তব্য রাখেন ৭ নং লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা, করল্যাছড়ি
গ্রামের বাসিন্দা এরিক চাকমা, করল্যাছড়ি রশিদ সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী
কল্যাণ প্রিয় চাকমা ও উক্ত বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র লিটু চাকমা।
বক্তারা
নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ধর্ষক আব্দুর রহিমকে হাইকোর্ট কর্তৃক জামিন
দেয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নিজ বিদ্যালয়ের
ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর নিম্ন আদালত লংগদু
করল্যাছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
দেয় ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করে। কিন্তু হাইকোর্ট ধর্ষকের উত্থাপিত ভিকটিমকে বিয়ের
মিথ্যা হলফনামা যাচাই-বাছাই না করে এবং ভিকটিমকে এক একর জমি লিখে দেয়ার শর্তে গত ১
জুন ২০২৩ ধর্ষক আব্দুর রহিমকে তিন মাসের অর্ন্তবর্তী জামিন দিয়ে কারাগার থেকে
মুক্তি দিয়েছে।
শুধুমাত্র এক একর জমি লিখে দেওয়ার শর্তে হাইকোর্ট কিভাবে একজন ধর্ষককে
জামিন দেয়? এমন প্রশ্ন রেখে বক্তারা বলেন, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ধর্ষকের প্রতি হাইকোর্টের উক্ত জামিন আদেশ দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং ভুক্তভোগী পরিবার তথা এদেশের মানুষকে হতাশ করেছে। এভাবে অপরাধীরা পার পাওয়ায় বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে বক্তারা
অভিযোগ করেন।
বক্তারা
বলেন, ধর্ষক আব্দুর রহিম জামিনে মুক্তির পরপরই একই পদে উক্ত বিদ্যালয়ে যোগদান করে
এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। কিন্তু চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় কোনো
সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির চাকরিতে যোগদান বা ফেরার কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষক সমাজের
কলঙ্ক একজন ধর্ষককে বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে আমরা আর দেখতে চাই না।
বক্তারা
অবিলম্বে ধর্ষক আব্দুর রহিমকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে স্থায়ীভাবে
বহিষ্কার ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখার দাবি জানান। একই সাথে তারা ধর্ষক
আব্দুর রহিমের মদদদাতা আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিয়াউর রহমানকে
সভাপতি পদ হতে বহিষ্কারের দাবি করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাশ বয়কটের
ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।