ইন্ডিজেনাস পিপলস ডিক্লেয়ারেশন প্রসঙ্গে
ট্যালেন্ট চাকমা
সংগৃহিত ছবি। |
ইন্ডিজেনাস পিপলস কারা?
১২ সেপ্টেম্বর ২০০৭
সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গৃহীত সনদের শিরোনাম হলো - United Nations
Declaration On The Rights Of Indigenous Peoples অর্থাৎ
‘আদিবাসী জনগোষ্ঠী’ বা মানুষের অধিকারের ঘোষণাপত্র। আদিবাসীর সার্বজনীন সংজ্ঞা
নেই। মূলত 'ইন্ডিজেনাস পিপলস' শব্দটি 'অ্যাবরিজিনস' এর সঙ্গে আদি বসতির সমধারক,
কিন্তু নির্দেশ করে ভূমিতে আদি অধিকার এবং সেই আদি বসতির সূত্রে অন্যান্য সম্পদকে।
ব্রিটিশরা ‘অ্যাবরিজিনস' শব্দটি তথাকথিত আদিম মানুষকে 'আধুনিক ভারতীয়' থেকে পৃথক
করার জন্য ব্যবহার করত। এককথায়, ‘আদিবাসী’ বলতে পুঁজিবাদী সমাজের বাইরে বসবাসরত
পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীকে বোঝায়।
তবে আন্তর্জাতিক
বিভিন্ন সংস্থা কাজের সুবিধার্থে আদিবাসীর সংজ্ঞা দিয়েছে। World Bank এর মতে,
"Indigenous Peoples are distinct social and cultural groups that share
collective ancestral ties to the lands and natural resources where they live,
occupy or from which they have been displace." ILO-169 (বিশ্ব শ্রম সংস্থা)
মতে, “আদিবাসী জনগোষ্ঠী বলতে ১. যাদের উৎপত্তি একটা জনগোষ্ঠী
হতে যারা একটা দেশের বা দেশের মধ্যে ভৌগোলিক অঞ্চলের বাসিন্দা, ২. যারা ঐ অঞ্চল
আবিষ্কারের সময় হতে বা ঔপনিবেশিক বা বর্তমান রাষ্ট্রসীমা গঠিত হবার আগে হতে বসবাস
করে আসছে এবং ৩. যাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর
কিছু ক্ষেত্রে আইনগত অথবা পূর্ণাঙ্গভাবে বৈধতা রয়েছে।”
১৯৪৭ এর পর থেকে ‘আদিবাসী
জনগোষ্ঠী’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জাতিসংঘ কর্তৃক “বিশ্বের আদিবাসীঃ
অংশীদারিত্বের নতুন দিগন্ত” শিরোনামে ১০ ডিসেম্বর ১৯৯৩ সাল হতে আন্তর্জাতিক
আদিবাসী দশক ঘোষণার কাজ শুরু হয়। তখন থেকে এই শব্দটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। মূলত
এই শব্দটি জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে পশ্চিমপন্থী এনজিওদের হাত রয়েছে। কারণ বিশ্বের
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্বল্প জনসংখ্যার গোষ্ঠীদের এক কাতারে নিয়ে আসার জন্য ফান্ডের
প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক। ১৯৯৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ৯ই
আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ঘোষণা করা হয়। ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর,
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে জাতিসংঘের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর
অধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্র অনুমোদন লাভ করে। ভোটাভুটিতে মোট ১৬৯টি রাষ্ট্র অংশ নেয়।
তার মধ্যে মোট ১৪৪টি ভোট পক্ষে, ৪টি বিপক্ষে (আমেরিকা, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া ও
নিউজিল্যান্ড) ও ১১টি রাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকে। ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর
মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঘোষণাপত্রের দুর্বলতা:
‘আদিবাসী’ মানুষের
অধিকারের সনদে ৪৬টি আর্টিকেল রয়েছে। অনুচ্ছেদের বেশিরভাগ ধারা নিঃসন্দেহে
যুগোপযোগী এবং সংখ্যায় ছোট জাতিগুলোর টিকে থাকতে যা যা দরকার তার সবকিছুই সনদে
অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যেমন: আদিবাসী মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার, ভূমি ও ভূখণ্ডের
মালিকানা, ঐতিহ্য ও প্রথা, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, সামরিক কার্যক্রম বন্ধ, উন্নয়ন ও
প্রতিষ্ঠান... নির্ধারণের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আর্টিকেলের কয়েকটি ধারা
বিতর্ক এবং স্ববিরোধী। যেমন-
আদিবাসী জনগোষ্ঠী সনদের
৩৩ নং আর্টিকেলে বলা হয়েছে,“আদিবাসী জনগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব প্রথা ও ঐতিহ্য মোতাবেক
তাদের আত্মপরিচয় বা সদস্যপদ নির্ধারণের অধিকার রয়েছে।” এতেই বুঝা যায়, আদিবাসী
অভিধা কারোর নৃতাত্ত্বিক কিংবা জাতিগত পরিচয় নয়। অধিকন্তু, আমাদের আদিবাসী
জনগোষ্ঠী বা মানুষ বলতে হবে, আদিবাসী হবে না। আদিবাসী ডিক্লেয়ারেশনে প্রতিটি
আর্টিকেলে Indigenous এর সাথে Peoples শব্দটি যুক্ত রয়েছে। তাই আমি ‘আদিবাসী’ বলার
মধ্যে দিয়ে নবপ্রজন্মের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আদিবাসী পরিচয় স্বতন্ত্র
জাতিগত আত্মপরিচয়ের সমার্থক হয়ে উঠছে, যা সংখ্যায় ছোট জাতিগুলোর জন্য অশনিসংকেত।
আদিবাসী সনদ আদিবাসী জাতি বলেনি আদিবাসী মানুষ বলেছে। আমাদের আত্মপরিচয় নির্ধারণে ‘আমি
আদিবাসী’ না বলে বলতে হবে – ‘আমি মারমা, আমি চাকমা, আমি ত্রিপুরা...।’
আদিবাসী মানুষের অধিকার
সনদের ২৮ ধারায় “আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বেদখলকৃত ভূমি, সম্পদগুলো যদি ফেরতের উপায় না
থাকে তাহলে তাদেরকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।” অর্থাৎ
পাহাড় এবং সমতলের জাতিসত্তাদের বেদখলকৃত ভূমিগুলোর বিপরীতে সরকার যদি ক্ষতিপূরণ দেয় তা মেনে নিরব হয়ে থাকতে হবে!
ডিক্লেয়ারেশনের ৪৬ নং
অনুচ্ছেদের ১ নং ধারাটি যা পুরো অধিকারের সনদটিকে স্ববিরোধার্থক করেছে। আর্টিকেল
৪৬ এর ১ নং ধারায় বলা হয়েছে, "Nothing in this Declaration may be
interpreted as implying for any State, people, group or person any right to
engage in any activity or to perform any act contrary to the Charter of the
United Nations or construed as authorizing or encouraging any action which
would dismember or impair, totally or in part, the territorial integrity or
political unity of sovereign and independent States." অর্থাৎ
এমন কোনো কাজ করা যাবে না বা কাজে জড়ানো থেকে নিবৃত্ত করা হয়েছে যা স্বাধীন
সার্বভৌম রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ঐক্য, রাষ্ট্রের ভৌগলিক অখণ্ডতার সম্পূর্ণ বা
অংশবিশেষের অঙ্গচ্ছেদ বা ক্ষতি করবে। মানে আর যাই করো কিছুতেই রাষ্ট্রের
অ্যাগেইনস্টে যেও না।
এটা হলো, এক গামলা দুধে
এক টুকরো গোবর পড়লে যেমন সেটি খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে ঠিক তেমনিই, যা পুরো সনদটিকে
অধিকার প্রতিষ্ঠায় অনুপযোগী করেছে। আর ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি পেলেই যে পাহাড় ও সমতলে
বসবাসকারী জাতিসত্তাগুলোর রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে তার কোন নিশ্চয়তাও এই
সনদে নেই।
একটি রাষ্ট্র পরিচালিত
হয় সংবিধানুযায়ী। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধান এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে দেশে
বসবাসরত সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোর অস্তিত্বকে পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়েছে। সংবিধানের
৬ নং অনুচ্ছেদের (২) এ বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং
নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিতি হইবেন।” এর মানে আমি যদি নিজেকে চাকমা,
ত্রিপুরা, মারমা, বম, গারো..... বলে পরিচয় দিই এটা হবে রাষ্ট্র বা সংবিধান বিরোধী।
অন্যদিকে, ইন্ডিজেনাস পিপলস ডিক্লেয়ারেশনের আর্টিকেল ৪৬ এর ১নং ধারা অনুসারে
পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চল’ স্বীকৃতির দাবি করাও রাষ্ট্রের
সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতার অংশবিশেষের অঙ্গচ্ছেদ ঘটানো বুঝায়।
এছাড়া সংবিধানের ১ নং
অনুচ্ছেদে লেখা আছে, “বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র যাহা
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামে পরিচিত হইবে।” এর মানে এটা বোঝায় যে পার্বত্য
চট্টগ্রাম চুক্তিতে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চল’ হিসেবে
স্বীকৃতির শর্তও সংবিধান পরিপন্থী। মজার ব্যাপার হলো, পিসিজেএসএস দলটি চুক্তিতে ‘উপজাতীয়
অধ্যুষিত অঞ্চল” স্বীকার করে ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতির দাবি জানানোর মাধ্যমে নিজেরাই
যেমন চুক্তি লঙ্ঘন করছে, একই সাথে চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বলে পার্বত্য
চট্টগ্রামকে ‘উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চল’ এর স্বীকৃতির দাবি করে জাতিসংঘের আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর অধিকার সনদেরও বিরোধিতা করছে। কারণ, আদিবাসী মানুষের অধিকার সনদের ৪৬ নং
অনুচ্ছেদেই বলে দেয়া হয়েছে “এমন কোনো কাজ করা যাবে না যা স্বাধীন সার্বভৌম
রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ঐক্য, রাষ্ট্রের ভৌগলিক অখণ্ডতার সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষের
অঙ্গচ্ছেদ বা ক্ষতি করবে।”
তবে, এটা ঠিক যে, বাংলাদেশের
সংবিধানে অস্বীকার করা হলেও এদেশে বাঙালি বাদে আরো ৪৫টির অধিক ভিন্ন ভাষাভাষী জাতিসত্তার
বসবাস রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমতলে বসবাসরত এসব জাতিসত্তাগুলোর নিজস্ব
জাতিগত ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি বিদ্যমান রয়েছে। ফলে তারা
প্রত্যেকে নিজেদেরকে স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে পরিচিত করার অধিকার রাখে। আর এই অধিকার
প্রতিষ্ঠার জন্যই বাস্তবত সংগ্রাম করতে হবে।
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রাজনীতির এনজিওকরণ:
এনজিও সংস্থা কাজ করে-
ধর্মীয় দাতব্য প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক আন্দোলন, পরিবেশ, নারী আন্দোলন, বিদেশনীতি,
মানবাধিকার ইত্যাদি নিয়ে। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ হল এনজিওদের অর্থলগ্নি
প্রতিষ্ঠান। আদিবাসী ধারণাটি যেহেতু মানবাধিকার বিষয় সেহেতু এনজিও সংস্থা আদিবাসী
আন্দোলনের সাথে জড়িত রয়েছে। এনজিওগুলো মূলত শাসক এবং শোষিতের মাঝে একটা বাফার জোন
তৈরি করে যাতে শাসক নির্বিঘ্নে শাসন কার্যপরিচালনা করতে পারে। বাফার জোন শাসককে
তার সমস্ত অপকর্মের দায়ভার থেকে রেহাই দেয়। স্নায়ুযুদ্ধের সময় পশ্চিমা
সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর অর্থায়নে পৃথিবীব্যাপি এনজিও সংস্থাগুলো বিস্তার লাভ করে।
এনজিওগুলো বিভিন্ন রাষ্ট্রে প্রেসার গ্রুপ বা চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী তৈরি করে যাতে
পশ্চিমা অনুগত সরকার বসানে যায় এবং এনজিওদের দ্বারা সৃষ্ট বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক
উত্থাপিত অনিয়ম, দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে চাপ সৃষ্টি করে সরকারী
দলকে বশে আনা যায়। পশ্চিমারা চাপ সৃষ্টি করে তখনই যখন আপনি তাদের স্বার্থের জন্য
কাজ করবেন না।
এনজিও প্রসঙ্গে
অরুন্ধতী রায় বলেছেন, "NGOs are dangerous. They do what the missionaries
used to do in colonial times. They are Trojan Horse. The worse the situation,
the more the NGOs." এনজিওগুলো এতটাই ক্ষমতাশীল এক দেশের সরকার পরিবর্তনে
তাদের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। অরুন্ধতী রায় তুলে ধরেছেন, “ভারতের বড় বড়
কর্পোরেশনগুলি—যেমন রিলায়েন্স, টাটা, এসার, এবং ইনফোসাইস—কীভাবে তারা মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক রকফেলার ফাউন্ডেশন এবং ফোর্ড ফাউন্ডেশনের মত কৌশল অবলম্বন
করছে। এই রকফেলার ফাউন্ডেশন এবং ফোর্ড ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের
স্টেট ডিপার্টমেন্টে, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিতে এবং পরে কর্পোরেট উদ্দেশ্য
নিয়ে অতীতে অনেক কাজ করেছে। এখন ভারতীয় কোম্পানিগুলি জনগণের এজেন্ডা নিয়ন্ত্রণ
করার জন্য দাতব্য ফাউন্ডেশনগুলির মাধ্যমে টাকা বিতরণ করছে।এই পদ্ধতিকে তিনি বলেন
‘পারসেপশন ম্যানেজমেন্ট’ বা ‘উপলব্ধির জায়গা নিয়ন্ত্রণ’। এই পদ্ধতির মধ্যে পড়ে
বেসরকারী সংস্থাগুলিকে চ্যানেলিং ফান্ড প্রদান, চলচ্চিত্র এবং সাহিত্য উৎসব
এবং বিশ্ববিদ্যালয়।.... এ সবকিছুর উদ্দেশ্য আসলে অসমতা বাড়িয়ে তোলে এমন নিওলিবারেল
পলিসির সমালোচনাকে চাপা দেওয়া। আস্তে আস্তে তারা কী কী কাজ হবে তা নির্ধারণ করে।
তারা জনগণের চিন্তা-ভাবনা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে জনগণের জন্য নির্ধারিত স্বাস্থ্যখাত
এবং শিক্ষাখাতের টাকা সেসব খাত থেকে বাদ পড়ে যায়। এসব বড় বড় কর্পোরেশনগুলি
এনজিওদের ফান্ড দিয়ে এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ঔপনিবেশ আমলে
মিশনারিরা যা করত তাই করে। আর নিজেদের দাতব্য সংস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু
তারা আসলে পৃথিবীকে কর্পোরেট-পুঁজির মুক্ত বাজারে পরিণত করার কাজটা করে....।"
ইন্ডিয়ায় নাগা জাতিসত্তার বিদ্রোহকে দমন করার জন্য ১৯৬৪ থেকে নাগাল্যান্ড পীস মিশন
প্রজেক্ট গান্ধী পিস ফাউন্ডেশন হাতে নেয়া হয়েছিল। আসলে এই মিশন গঠনের কাজটি করেন
গান্ধীবাদীদের 'রাজনৈতিক পথপ্রদর্শক' জয়প্রকাশ নারায়ণ। জয়প্রকাশ নারায়ণের ভাষায় –“প্রতিকার
ব্যবস্থা শিকড় পর্যন্ত না পৌঁছানো পর্যন্ত যতই গ্রেপ্তার, কারাবাস এবং গুলি বর্ষণ
হোক না কেন, নকশালরাজ বা যে কোনো ধরনের বিপ্লবী হিংসা থামানো সম্ভব নয়।”
বাংলাদেশে সরকার
উঠানামা খেলায় এনজি সংস্থার বিরাট প্রভাব রয়েছে। উনিশ'শ ছিয়ানব্বই সালে জাতীয়
নির্বাচনে বিএনপি সরকারকে হঠানোর জন্য এডাবের অধীন বড় বড় এনজিও সংস্থা সাথে হাত
মিলিয়ে 'Made Easy' প্লেন তৈরি করেছিল। তাছাড়াও ১৯৯৫ অসহযোগ আন্দোলন, ৯৬ নির্বাচনে
এনজিও সংস্থা রাস্তায় নেমেছিল। বর্তমান ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ঠিকে থাকার
পেছনে এসব এনজিওদের অবদান রয়েছে। পাহাড়ের এনজিও চুক্তির পূর্ববর্তীতে এবং পরবর্তী
শাসকের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পার্বত্য চুক্তির পূর্ববর্তীতে শান্তিবাহিনী
বিদ্রোহী এবং জুম্মদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করার জন্য বহু এনজিও সংস্থা কাজ
করে। যেমন, পাহাড়ে ১৯৮০ সাল থেকে পাহাড়িদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করার কাজটি
শুরু করে সৌদি আরব ও কুয়েতের সাহায্যপুষ্ট “আল রাবিতা” নামক ইসলামিক মিশনারী
সংগঠন। এই সংস্থাটির প্রভাব দেখতে পাওয়া যায় নিম্নোক্ত ঘটনার মাধ্যমে,"১৯৯০
সালে আলীকদমে ১৭ জন মারমা সম্প্রদায়ের লোককে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়।
ওয়েলফেয়ার ফান্ডের কাছ থেকে এক পাহাড়ি সাহায্য চাইতে সেন্ট্রাল অডিটে গেলে তাকে
বলা হয়, “কেন তুমি মুসলমান হয়ে যাও না? তাহলে তো আমরা সবাই ভাই ভাই হয়ে যাই।”
এমনকি সেটলার বাঙালিদের পাহাড়ে পুনর্বাসনের জন্য ইউএনডিপি এবং ইউনিসেফের মতো
আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছিল। শান্তিবাহিনীদের দমনের জন্য প্রতিষ্ঠিত 'পার্বত্য
চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড' এই এনজিও সংস্থাদের আর্থিক সহায়তায় গড়ে উঠেছিল।
পশ্চিমা অর্থায়নে
পরিচালিত এই এনজিওগুলো আদিবাসী অধিকার সনদের অন্তরালে পৃথিবীজুড়ে জাতীয় মুক্তি
আন্দোলনগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদের উপর নির্ভরশীল করছে। পাহাড়ের রাজনৈতিক আন্দোলন
পরনির্ভরশীল, এনজিওপন্থী হলে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশের দয়া, দাক্ষিণ্যে,
ভিক্ষায় আমাদের আন্দোলন পরিচালিত করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার ইচ্ছে করলে পশ্চিমা
রাষ্ট্রগুলোর সাথে সমঝোতা করে এনজিওবাদীদের আন্দোলনকে স্তিমিত করে দেবার সক্ষমতা
রাখে। নিপীড়ত জনতার মুক্তি আন্দোলনের সফলতা নির্ভর করে জনগণের নিজস্ব শক্তির উপর,
কারোর দয়া ভিক্ষায় নয়। সারাবিশ্বের ক্ষেত্রে দেখা যায় একদা যারা বিপ্লবী রাজনৈতিক
আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিল বা সমাজ পরিবর্তনের লড়াইয়ের অগ্রণী যোদ্ধা ছিলো, তারাই
সরকারের সাথে চুক্তি করে বিপ্লবী রাজনীতিকে পরিত্যাগ করে স্বেচ্ছায় এনজিওদের
রাজনীতিকে গ্রহণ করে রাষ্ট্র এবং কর্পোরেট আগ্রাসনের আনুগত্য হয়ে পকেট ভারি করছে।
পাহাড়ও তার ব্যতিক্রম নয়। পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা এনজিওদের রাজনীতির শিকার
হচ্ছেন। সেজন্য তাঁরা আন্দোলন না করে অনুষ্ঠান করে। তাদের কাছে আদিবাসী ধারণাটি
ফেটিশে পরিণত হয়েছে। তাইতো প্রত্যেক বছর যেভাবে রাস্তায় নাচ-গানের মধ্যে দিয়ে
আদিবাসী দিবস পালিত হয়, এতে মনে হয়, বাংলাদেশের আদিবাসী জনগণ সুখে জীবন যাপন করছে।
এখানে পুঁজিবাদী শাসকের আগ্রাসন চলে না।
আদিবাসী আন্দোলনে সংকুচিত জাতীয়তাবাদের আন্দোলন:
জে.ভি.স্টালিনের
ভাষায়,“জাতি হচ্ছে একটি সাধারণ ভাষা, সাধারণ ভূখণ্ড, সাধারণ অর্থনৈতিক জীবন, আর
একটি সাধারণ সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত মানসিক গড়নের ভিত্তিতে গঠিত,
ঐতিহাসিকভাবে বিকশিত জনগণের স্থায়ী জনসমষ্টি।”
জাতি ধারণা থেকে
জাতীয়তাবাদের উদ্ভব। মূলত একটি রাষ্ট্রে জাতিগত সমস্যা থেকে জাতীয়তাবাদ উত্থান
ঘটে। যেমন, পাকিস্তানি শাসক উর্দুকে জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে বাঙালি
জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। তবে জাতীয়তাবাদ ধর্মীয় কিংবা সাংস্কৃতিক হতে পারে। তার
প্রকৃষ্ট উদাহরণ দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত উপমহাদেশের বিভক্তি
(ভারত-পাকিস্তানের সৃষ্টি)। অরবিন্দু ঘোষ, বিনায়ক দামোদর সাভারকারের মতো সাহিত্য
সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের লেখায় ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের হদিশ পাওয়া যায়। বঙ্কিমচন্দ্র
'ভারত কলঙ্ক' প্রবন্ধে স্পষ্ট করেই বলেছেন, "আমি হিন্দু, তুমি হিন্দু, রাম
হিন্দু, যদু হিন্দু, আরও লক্ষ লক্ষ হিন্দু আছে। এই লক্ষ লক্ষ হিন্দুমাত্রেরই
যাহাতে মঙ্গল, তাহাতেই আমার মঙ্গল। যাহাতে তাহাদের মঙ্গল নাই, আমারও তাহাতে মঙ্গল
নাই। অতএব, সকল হিন্দুর যাহাতে মঙ্গল হয় তাহাই আমার কর্তব্য।,,,,,, হিন্দুজাতি
ভিন্ন পৃথিবীতে অন্য অনেক জাতি আছে। তাহাদের মঙ্গলমাত্রেই আমাদের মঙ্গল হওয়া সম্ভব
নহে। অনেক স্থানে তাহাদের মঙ্গলে আমাদের অমঙ্গল। যেখানে তাহাদের মঙ্গলে আমাদের
অমঙ্গল, সেখানে তাহাদের মঙ্গল যাতে না হয় আমরা তাহাই করিব।"
সাংস্কৃতিক
জাতীয়তাবাদের ধারণা দ্বিজাতিতত্ত্বের জন্য খুবই উপযোগী হয়েছিল। সাহিত্যিক ও
রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদ তাঁর রাজনৈতিক আত্মজীবনীতে স্মরণ করেছেন যে, প্রথমে
মুসলিম লীগের পাকিস্তান দাবী সমর্থন না করলেও শেষ পর্যন্ত ১৯৪৪ সালে তিনি সে দাবি
সমর্থন করেছেন। সে বছরে কলকাতায় অনুষ্ঠিত মূল সভাপতির অভিভাষণে তিনি বলেছিলেন,
"আমি বলেছিলাম পাকিস্তান দাবীটা প্রধানতঃ কালচার অটনমির দাবী। বলিয়াছিলাম
রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতার চেয়েও কালচারের অটনমি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এই দিক হইতে
পাকিস্তানের দাবী শুধু মুসলমান সাম্প্রদায়িক দাবী নয়, এটা গোটা ভারতের কালচারাল
মাইনরেটির জাতীয় দাবী।"
জাতীয়তাবাদের ধরণ
রয়েছে। অমিত হিল 'জুম্ম জাতীয়তাবাদ, সমস্যা, ভবিষ্যৎ ও করণীয়' লেখায়
লিখেছিলেন,"নির্দিষ্ট এক জাতির জাতিগত জাতীয়তাবাদ এবং সামগ্রিক জাতীয়তাবাদ এ
দুটোর মধ্যে রাজনৈতিক দর্শনভেদে পার্থক্য আছে। জাতি হচ্ছে কিছু মানুষের ভাষা,
সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের সমষ্টি। সেই নির্দিষ্ট জাতির প্রতি যে আবেগ ও অহংকারবোধ তাই
জাতীয়তাবাদ। যেমন- বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ। অন্যদিকে এক বা একাধিক জাতির মধ্যেকার
পারষ্পরিক বন্ধনকে ভেদাভেদহীনভাবে দৃঢ়তা দিতে রাজনৈতিক প্রয়োজনে যে সৃষ্ট
জাতীয়তাবাদ, তাই সামগ্রিক (রাজনৈতিক) জাতীয়তাবাদ। যেমন- ভারতীয় জাতীয়তাবাদ।
সামগ্রিক জাতীয়তাবাদ অনেকটা রাজনৈতিক স্থিরতার জন্য সৃষ্ট। এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
হচ্ছে একাধিক জাতিসমষ্টি নিয়ে জাতি মানুষের মৌলিক অধিকারকে সমানভাবে চর্চা করা।"
এক্ষেত্রে মানবেন্দ্র
নারায়ণ লারমার 'জুম্ম জাতীয়তাবাদ' হল সামগ্রিক জাতীয়তাবাদ। তিনি জুম্ম
জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে পাহাড়ে বসবাসরত অধিবাসীদের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে
ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। জুম্ম শব্দটির পাহাড়িদের জুম [চাকমা ভাষায়] চাষ
থেকে এসেছে। তবে অনেকেই জুম্ম শব্দটি চাকমা শব্দ বলে চালিয়ে দেয়, যা সঠিক নয়।
জুম্ম জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে প্রয়াত তাতিন্দ্র লাল চাকমা (পেলে) লিখেছিলেন, “চাকমা
ভাষা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জু্ম শব্দটা যদিও ব্যবহৃত হয় কিন্তু জুমচাষীদের
জুম্ম বলার কোনো উদাহরণ নেই। চাকমারা জুম চাষীদের জুমবোলা বলেই উচ্চারণ করে থাকে
যেমনি জমিচাষীদেরও বলে ভুঁইবোলা। তারা কখনো জুম চাষীদের জুম্ম বলে ডাকতো না। এই
শব্দটা প্রথম পাওয়া যায় চট্টগ্রামবাসীদের অনেককটা ঠাট্টাছলে বলা কটুবাক্য হিসেবে।
তথ্য নিয়ে দেখা গেছে, জুম্ম শব্দটা আসলে চট্টগ্রামবাসীদেরও নয় অসমিয়া ভাষায়
ব্যবহৃত শব্দ যার অর্থ উচ্চভূমির বাসিন্দা। এটা ভূখন্ডগত ঐক্য ও অর্থনৈতিক ঐক্যের
শব্দ, কোনো চাপিয়ে দেয়া শব্দ নয়।"
বিদ্রুপের সুরে বলতে
হয়, ‘আদিবাসী’ শব্দটির মতো ‘জুম্ম’ শব্দটির ফান্ড না থাকায় জুম্ম শব্দটি মৃত নদীর
মত হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য জুম্ম জাতীয়তাবাদের সঠিক চর্চার অভাবে জাতিগুলোর মধ্যে
বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। আদিবাসী শব্দটির পজিশনিংয়ের কারণে অনেকেই জু্ম্ম পরিচয়ের চেয়ে
আদিবাসী পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যে বোধ করে। কিন্তু আদিবাসী পরিচয় রাজনৈতিক
জাতীয়তাবাদের ভিত্তি নয় বরং সংস্কৃতিভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্বল্প সংখ্যার গোষ্ঠীদের
এক কাতারে নিয়ে আসে। সাংস্কৃতিক আন্দোলন প্রসঙ্গে বলতে হয়, এদেশে তথাকথিত
আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বেহাল দশা। ভারতীয় গণ্যনাট্য সংঘ যেভাবে মানুষের
নিত্যদিনের দুঃখ, কষ্ট, বঞ্চনা, শোষণ তুলে ধরেছিল এবং সেই শোষণ থেকে মুক্তির উপায়
জনগণের মাঝে জাগিয়ে তুলেছিল, এদেশে তথাকথিত আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক আন্দোলন কিছুই
পারছে না। উল্টো নাচ-গানের রোমান্টিসিজমে সুবিধাবাদী এলিট শ্রেণীর উত্থান হয়েছে।
আদিবাসীদের সুযোগ সুবিধা ভোগ করে এই পুঁজিপতি শ্রেণিরা। যাঁরা লিবারেলিজমের চর্চা
করে সমাজে মুক্তির স্বাদ খুঁজে। তাই বাস্তবিক অর্থে ‘আদিবাসী স্বীকৃতি’ আন্দোলন
একটা ফ্যান্টাসি। এটি রাজনৈতিক আন্দোলনকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে। মাও বলেছিলেন, “নিষ্ক্রিয়তা
আমাদের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের লক্ষ্য শত্রুকে নিষ্ক্রিয় করা।” এসবের দায়ভার অবশ্যই
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এবং বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের উপর বর্তায়।
তাই আমাদের বিতর্কিত
এবং স্ববিরোধী ঘোষণাপত্র নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। যারা এইসব নাম দিয়ে অধিকারের
আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করছে, জনগণকে রোমান্টিসিজমে ডুবিয়ে নিষ্ক্রিয় করে রাখছে,
তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর
আদিবাসী ফেটিশ থেকে বেরিয়ে এসে নিপীড়িত জনগণের মুক্তির আন্দোলনে সামিল হতে হবে।
জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধ শাসকের ব্যরিকেড আটকাতে পারে না।
রেফারেন্স:
১. বাংলার বহুজাতিঃ
বাঙালি ছাড়া অন্যান্য জাতির প্রসঙ্গ
২. আদিবাসী ধারণা,
আদিবাসী ফ্যাসিলিটেটস গ্রুফ
৩. NGO'দের রাজনীতি
রাজনীতির NGO করণ
৪.://www.shamprotik.com/%e0%a6%85%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a6%a4%e0%a7%80-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%96%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%b0/
৫. এনজিও প্রসঙ্গে কিছু
কথা, উত্তরখণ্ড
৬. জীবন আমাদের নয়
৭. মার্কসবাদ ও জাতি
সমস্যা, জে. ভি. স্টালিন
৮. জাতীয়তাবাদ,
সাম্প্রদায়িকতা ও জনগণের মুক্তি, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
৯. জুম্ম জাতীয়তাবাদ
সমস্যা সম্পর্কে, শ্রী তাতিন্দ্র লাল চাকমা, [উন্মেষ, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী
ছাত্র পরিষদ]
[মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখাগুলো লেখক/লেখকদের নিজস্ব মতামতই প্রতিফলিত ]
সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।