বিজিতলা-গামারিঢালায় পুনর্বাসিত রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর দাবিতে পানছড়িতে বিক্ষোভ

পানছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩





খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার বিজিতলা ও গামিরাঢালা
এলাকায় ভূয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে পুনর্বাসিত রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরে ফেরত পাঠানো
এবং অবৈধ পুনর্বাসনের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে পানছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণতান্ত্রিক
যুব ফোরাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।



আজ শুক্রবার (১লা সেপ্টেম্বর ২০২৩) বেলা
২টায় পানছড়ি উপজেলার লোগাঙ বাবুড়ো পাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে করল্যাছড়ি দোকান
ঘুরে এসে বাবুড়ো পাড়া বাজারে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।



সমাবেশে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি
উপজেলা সভাপতি রিপন ত্রিপুরার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পরান্টু চাকমার সঞ্চালনয়
বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফের পানছড়ি এলাকার সংগঠক হরি কমল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বরুন চাকমা, পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক
সভাপতি মিটন চাকমা, পিসিপির পানছড়ি উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ধরেন ত্রিপুরা ও পার্বত্য
চট্টগ্রাম নারী সংঘের পানছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাবিনা চাকমা।


সমাবেশে বরুন চাকমা বলেন ৮০ দশকের সময়েও
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি-বাঙালীর ব্যবধান অনেক ছিল। কিন্তু সমতলের বিভিন্ন এলাকা
হতে হাজার হাজার বাঙালী পরিবারকে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে পাহাড়িদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করা
হয়েছে। এই সেটলারদের দিয়ে পাহাড়িদের হাজার হাজার একর জায়গা-জমিসহ বাস্তুভিটা কেড়ে নেয়া
হয়েছে। এত কিছুর পরও ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। এখন নতুন করে মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের
অনুপ্রবেশ করানো হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধভাবে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন পাহাড়িদের
জন্য অশনি সংকেত। তাই ছাত্র-যুবক-নারীসহ সর্বস্তরের জনগণকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে
হবে।

হরিকমল ত্রিপুরা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে এদেশের শাসকগোষ্ঠি ভূমি কেড়ে নেয়াসহ পাহাড়িদের ধ্বংস করতে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তার নতুন সংযোজন হচ্ছে মায়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে এনে পুনর্বাসন করা।

তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মাটিতে রোহিঙ্গাদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ও পুনর্বাসন কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। আমরা জীবন দিয়ে হলেও আমাদের মাতৃভূমি, বাস্তুভিটা, জায়গা-জমি রক্ষা করবো।



মিটন চাকমা বলেন, সরকার-সেনাবাহিনী চায়
জুম্মদের ধ্বংস করতে। তাই পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুপ্রবেশ
করাচ্ছে। বিজিতলা ও গামারিঢালা এলাকায় ৩৩ পরিবার রোহিঙ্গা পুনর্বাসনও তারই অংশ। অবিলম্বে
এই রোহিঙ্গাদের তাদের কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরে ফিরিয়ে নিতে হবে।



তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আশির দশকের
জনগণ আর বর্তমান জনগণ এক নয়, তা আমরা সরকারকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই। পাহাড়িদের
ধ্বংসের চেষ্টা করা হলে এ অঞ্চলের ছাত্র-যুব সমাজ ও জনগণ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।



সাবিনা চাকমা বলেন, আমাদেরকে নিজেদের জায়গা
ও বসতভিটায় সুন্দরভাবে বসবাস করার জন্য সবাইকে সোচ্চার ও সচেতন হতে হবে। দিন দিন যেভাবে
সেটলার বাঙালিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নতুন করে যে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসা হচ্ছে
এর জন্য আমাদেরকে প্রতিবাদ করতে হবে, আন্দোলন করতে হবে।



সমাবেশ থেকে বক্তারা অনতিবিলম্বে বিজিতলা
ও গামারিঢালা এলাকায় অবৈধভাবে পুনর্বাসিত রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে তাদের আশ্রয় শিবিরে
ফেরত পাঠানো এবং রোহিঙ্গাদের অবৈধ পুনর্বাসনের সাথে জড়িত বিজিতলা সেনা ক্যাম্প কমাণ্ডার
মো. ইয়াছিনসহ সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url