রামগড়ে ইউপিডিএফসহ তিন সংগঠনের আলোচনা সভা

রামগড় প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ২০ আগস্ট ২০২৩


খাগড়াছড়ির রামগড়ে ইউপিডিএফ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, ও গণতান্ত্রিক
যুব ফোরামের যৌথ উদ্যোগে ’৪৭-এ বেলুচ রেজিমেন্টের আগ্রাসন, ’৭৩-এ মুজিব কর্তৃক
বাঙালিতে প্রমোশন দান, পঞ্চদশ সংশোধনী আইনে বাঙালি জাতীয়তাবাদ 'আরোপ এবং পাহাড়ি
জনগণের অস্তিত্ব হুমকির মুখে
ছাত্র যুব
সমাজের করণীয়
শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।



আজ রবিবার (২০ আগস্ট ২০২৩) আয়োজিত আলোচনা সভায় ইউপিডিএফ’র রামগড় উপজেলা ইউনিটের সমন্বয়ক এডিশন চাকমার সভাপতিত্বে ও সংগঠক নিতু চাকমার
সঞ্চানায় বক্তব্য রাখেন ইউপিডিএফ সংগঠক সুভাষ ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের
কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রচার সম্পাদক রজেন্টু চাকমা, রামগড় উপজেলা সভাপতি জার্মেন্ট
ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রামগড় উপজেলা সভাপতি অসীম চাকমা ও সাবেক মেম্বার
সুমন কান্তি চাকমা।



বক্তারা বলেন, ১৯৪৭ সালের ২০ আগস্ট পাকিস্তানের বেলুচ
রেজিমেন্ট কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে যে আগ্রাসন চালানো হয়েছিল তার মূল হোতা
হচ্ছেন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানে
অন্তর্ভুক্ত না করলে বেলুচ রেজিমেন্টর পক্ষে এ আগ্রাসন চালানো সম্ভব হতো না। সে
সময় পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতে অন্তর্ভুক্তর জন্য স্নেহ কুমার চাকমাসহ পাহাড়ি
নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন দেনদরবার করলেও ব্রিটিশ ও ভারতীয় নেতৃবৃন্দ তাতে সহযোগীতা
করেননি। ফলে পাহাড়ি জনগণের জীবনে নেমে আসে অভিশপ্ত কালো অধ্যায়।


তারা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি শাসনের অবসান ঘটলেও পার্বত্য
চট্টগ্রামে আগ্রাসন, দমন-পীড়ন, অন্যায় শাসন-শোষন বন্ধ হয়নি। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত
হওয়ার পরপরই সরকার প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান পার্বত্যবাসীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
শুরু করেন। তিনি ’৭২ সালের সংবিধানে উগ্রবাঙালি জাতীয়তাবাদ অন্তর্ভুক্ত করে সকল
জাতিসত্তার ওপর বাঙালি জাতীয়তা আরোপ করেন এবং ’৭৩ সালে রাঙামাটিতে সফরে গিয়ে
জনসমাবেশে বক্তৃতাকালে পাহাড়িদের বাঙালিতে প্রমোশন দেন! পরবর্তীতে তিনি পার্বত্য
চট্টগ্রামে সেনানিবাস স্থাপনের মাধ্যমে পাহাড়িদের উপর তার উগ্রবাদী নীতি প্রয়োগ
করেন। একইভাবে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের
কন্যা শেখ হাসিনা তার পিতার পদাঙ্গ অনুসরণ করে ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে
আবারো সংবিধানে সকল জাতিসত্তার ওপর বাঙালি জাতীয়তা আরো করেছেন। এতে করে পার্বত্য
চট্টগ্রামসহ দেশে বসবাসরত জাতিসত্তাসমূহের অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার
অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।



বক্তারা বলেন, এ অঞ্চলের জনগণের অন্যায় দমন-পীড়ন ও আগ্রাসনের
বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর বীরত্বপূর্ণ ইতিহাস রয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষ মুঘল, ব্রিটিশ
অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াই করেছেন। পাকিস্তানের আগ্রাসন মেনে নেয়নি।
বর্তমানে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠির অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে
যাচ্ছেন।



তারা ছাত্র-যুব সমাজকে আগামী দিনের লড়াই-সংগ্রামের জন্য
প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ছাত্র-যুবকরাই জাতির ভবিষ্যত। শাসকগোষ্ঠির সকল
অন্যায়-অবিচার ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র যুব সমাজকে রুখে দাঁড়াতে হবে।



 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url