বেলুচ রেজিমেন্ট কর্তৃক আগ্ৰাসনের ৭৬ বছর উপলক্ষে মানিকছড়িতে আলোচনা সভা

মানিকছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ২০ আগস্ট ২০২৩


পাকিস্তানের বেলুচ রেজিমেন্ট কর্তৃক পার্বত্য
চট্টগ্রামে আগ্রাসনের ৭৬ বছর উপলক্ষে খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে আলোচনা সভা করেছে ইউপিডিএফ
মানিকছড়ি ইউনিট।



আজ রবিবার (২০ আগস্ট ২০২৩)  “ ’৪৭ সালে ‘দেশ বিভাগের’ বেদীতে পার্বত্যবাসীদের
বলিদান এবং পাহাড়ি জনগণের অস্তিত্বের লড়াই সংগ্রাম” শীর্ষক উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব
করেন ইউপিডিএফের মানিকছড়ি ইউনিটের সমন্বয়ক ক্যহ্লাচিং মারমা।



ইউপিডিএফ সদস্য অংচিং মারমার সঞ্চালায়
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভঅপতি অংজাই
রোয়াজা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মানিকছড়ি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক অংচিং মারমা, কার্বারী
মংবা মারমা, কার্বারী মংপ্রু মারমা, কার্বারী ইমন চাকমা ও বাবু মারমা প্রমুখ।


সভায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম
এক সময় স্বাধীন ছিলো। এ অঞ্চলিত কার্পাস মহল হিসেবে পরিচিত ছিল। এ অঞ্চলের জনগণ মুঘলদের
সাথে যুদ্ধ করে নিজেদের স্বাতন্ত্র্যতা রক্ষা করেছিল। কিন্তু ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের
বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হলে ভারতীয় উপমহাদেশের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত
হয় বিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তারা দুশো বছর সময়কাল শাসনের পর ১৯৪৭ সালে ১৪ আগস্ট
পাকিস্তান ও ১৫ আগস্ট ভারত নামে দুটি রাষ্ট্র সৃষ্টি করে ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে চলে
যায়। এই ভারত বিভক্তির প্রাক্কালে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি
জানিয়ে ’৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্নেহ কুমার চাকমার নেতৃত্বে রাঙাামটিতে ভারতের পতাকা উত্তোলন
করা হয়। অপরদিকে বোমাং রাজার নেতৃত্বে বান্দরবানে উত্তোলন করা হয় বার্মার পতাকা। কিন্তু
ব্রিটিশরা পাহাড়ি জনগণের দাবি-দাওয়া উপেক্ষা করে পরিকল্পিতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে
মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তানের সাথে জুড়ে দেয়। পরবর্তীতে ’৪৭ সালের ২০ আগস্ট পাকিস্তানের
বেলুচ রেজিমেন্ট পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ করে রাঙামাটি ও বান্দরবানে উড্ডীন থাকা
ভারত ও বার্মার পতাকা নামিয়ে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করে আগ্রাসন চালায় এবং এ অঞ্চলকে
পাকিস্তানের শাসনাধীনে নিয়ে যায়। তারপর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের জীবনে চরম
দুঃখ-দুর্দশা নেমে আসেছে। ১৯৬০ সালের দিকে পাকিস্তান সরকার কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করলে
৫৪ হাজার একর জমি পানির নীচে তলিয়ে যায়, এতে লক্ষাধিক মানুষ উদ্বাস্তু হয়।



পরর্বতীতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শাসন
থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও এখনো পাহাড়ি জনগণ শাসকগোষ্ঠি দ্বারা আগ্রাসনসহ নানা নিপীড়ন-নির্যাতনের
শিকার হচ্ছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। তারা বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান থেকে বর্তমান পর্যন্ত
বাংলাদেশে যেসব সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারা সকলেই পাহাড়িদের উপর দমন-নীতি বজায় রেখেছে।
বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পাহাড়ি জনগণ আরো বেশি নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।



বক্তারা শাসকগোষ্ঠির অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে
সোচ্চার হয়ে রুখে দাঁড়াতে ছাত্র-যুব সমাজসহ জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।



সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url